ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

চট্টগ্রামে উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন পন্ড, আহত ১২

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :::

চট্টগ্রামে উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে পাল্টাপাল্টি শ্লোগানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে। পন্ড হয়ে যায় সম্মেলন।

আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ভেতরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এসম সম্মেলন মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এমএ সালাম, মাহফুজুর রহমান মিতা এমপি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন প্রমুখ।

জানা গেছে, সকাল ১০ টা সাড়ে ১০ টার মধ্যেই একে একে উপস্থিত হন প্রধান অতিথি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা। সোয়া ১১টায় বাইরে এসে সম্মেলন উদ্বোধন করেন অতিথিরা।

এরপর যথারীতি অনুষ্ঠান শুরু হয়। বেলা পৌনে ১২ টার দিকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। এসময় প্যান্ডেলের এক কোনায় শ্লোগান দিতে থাকে কিছু নেতাকর্মী। তখনই শুরু হয় উত্তেজনা, পাল্টাপাল্টি শ্লোগান। তাদের থামাতে ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে বক্তব্য বন্ধ করে দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন । তাতেও উত্তেজনা থামেনি। এই উত্তেজনার মাঝেই বক্তৃতা দিতে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সাকিব হাসান সৈয়দ। এসময় সম্মেলন কক্ষের পশ্চিম-দক্ষিণ কোণায় আকস্মিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। বেধে যায় সংঘর্ষ। দিকবেদিক ছুটতে থাকে নেতাকর্মীরা। আশপাশের এলাকায় ব্যবসায়ীরা তাতক্ষনিক দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। অন্য পাশে রাউজানের এমপি ফজলে করিমের বিবদমান দুই গ্রুপের মাঝে তুমুল সংঘর্ষ বাদে। খোদ এমপি নিজেও তাদের থামাতে ব্যর্থ হয়। পরে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় অন্তত ১২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে এখবর সম্মেলনস্থলে ছড়িয়ে পড়লে সেখানেও উত্তেজনা বেড়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একপর্যায়ে সম্মেলনের বাইরে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অতিথিরা সম্মেলনস্থল ত্যাগ করে বেরিয়ে গেছেন। সম্মেলনস্থলে ছাত্রলীগের একটি অংশ মঞ্চের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিক্ষোভ করছে। বিক্ষোভকারীরা তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা, আমি কে তুমি কে বাঙ্গালি বলে শ্লোগান দিতে থাকে। এদের মধ্যে কেউ কেউ রাউজান থেকে নির্বাচিত সাংসদ ফজলে করিমের পক্ষে শ্লোগান দিতে শোনা যায়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জহির উদ্দিন জানান, তিন জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তারা সামান্য আহত হয়েছেন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ওসি জসিম উদ্দিন জানান, দু পক্ষের মারামারির কারণে সম্মেলন বন্ধ হয়ে গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থ নিরাপত্তার দায়িতে রয়েছে। বড় ধরনের কিছু হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।

উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তৈয়ব সাংবাদিকদের জানান, সম্মেলন মঞ্চে যখন জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার বক্তব্য রাখছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তখনই বহিরাগতরা শান্তিপূর্র্ণ সম্মেলনে বিশৃঙ্খলা করেছে।

জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা সম্মেলনে ঢুকে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও জানান এ নেতা।

পাঠকের মতামত: